নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

নিম পাতার পরিচিয় আমরা সবাই জানি আলাদা করে কি বলবো আপনাদের তবুও আপনারা যারা নিম পাতার আরো বিভিন্ন তথ্য জানার জন্য এসেছেন তাদের বলছি আপনারা ঠিক জায়গায় এসেছেন। আপনাদের না জানা তথ্য গুলো আজ আমরা 

নিম-পাতার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-জেনে-নিন

আলোচনা করবো। নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা আজ কথা বলবো।  নিম পাতা আমাদের ত্বকের জন্য খুব উপকারী। যার পাতা থেকে শেখর অব্দি কাজে ব্যবহৃত হয়। নিম গাছের বাকল শেখর ও পাতা দিয়ে ঔষধ তৈরি হয়।

পেজ সূচিপত্রঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা 

নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা 

 নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে কথা বলছি। নিম পাতা মানে যেন একটা তেতো তেতো ভাব কিন্তু আমরা সবাই জানি এর উপকারিতা। এই বৃক্কের পাতা তেতো হলেও এর উপকারিতা এত বেশি যে এর কথা বলে শেষ করা যাবে না। নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে কথা বলছি উপকারিতা সম্পর্কে তো আমরা জানছি কিন্তু অপকারিতা টা আবার কি। আসলে অপকারিতা টা হল এর অধিক ব্যবহার। আমরা যে 

কোন জিনিসই যখন অতিরিক্ত ব্যবহার করি তখনই আমাদের জন্য সেটা অপকারিতা রূপ ধারণ করে। নিম পাতার উপকারিতা ও অপরিক অপকারিতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এর উপকারিতা টাই বেশি। আমাদের শরীরের যত ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস রয়েছে তা নির্মূল করে নিম পাতা। আমাদের শরীরে অ্যান্টিসেপটিক এর কাজ করে নিম পাতা। আপনার ক্ষতস্থানে ব্যথার উপশম হিসেবেও কাজ করে নিম পাতা।

নিম গাছের বর্ণনা

নিম (Neem) বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ একটি ঔষধী বৃক্ষ। নিম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta indica. এই গাছের শিকড় থেকে গাছের আগা পর্যন্ত সবটাই আমাদের জন্য উপকারী এই ধরুন ডাল শেকর পাতা ফুল ফল সবে মানুষের প্রতিদিনের কাজে ব্যবহার করা হয়। নিম গাছের আকৃতির সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়।

 নিম পাতার বৈশিষ্ট্য 

 নিম গাছ সাধারণত ২০ থেকে ৩০ মিটার ৬০ থেকে ১০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে। এর মূল আকর্ষণ হল গোলাকার মুকুট পুরো লোমযুক্ত থাকে এর গাছের ছাল। গাছের সারা গায়ের দাগ যুক্ত লিফলেট থাকে এবং সাধারণত এটি চিরহরি তো তবে যখন অতিরিক্ত তাপমাত্রা বা খরা প্রবণ হয় তখন এর পাতা ঝরে পড়ে। 

নিম পাতার ব্যবহার 

 নিম পাতার ব্যবহার তো প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। আমরাও এর ব্যবহার বিধি জানিনা তা নয় কিন্তু বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় কসমেটিক যখন আমরা ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে থাকি তখন আমরা নিম পাতার এই মধুর গুণগুলো মনে রাখতে ভুলে যাই। আসুন আমরা জেনে নিই এই তেতো নিমের মধুর গুন গুলো কি কি ?

  •  ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী নিম পাতা। আমাদের ত্বকের সুরক্ষার জন্য এর উপকারিতা অনেক। আপনাদের ত্বকে যখন ব্রণের মত দেখা দেয় তখন নিম পাতা তেতো করে লাগালে আপনার ব্রণ দূর হবে।
  •  আপনাদের মাথায় যদি কারো চুলকানি থাকে তাহলে নিমপাতা বেটে রস মাথায় লাগাতে পারেন তাতে করে আপনাদের চুলকানি দূর হবে এবং আপনার চুলের খুশকি দূর হবে এবং চুল শক্ত মজবুত তবে চুলের চুলের গোড়ায় যত পাঙ্গাস থাকে তো দূর হবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।
  •  শুধু মাথার স্কালপে চুলকানি নয় আপনাদের শরীরের যেকোন স্থানে চুলকানিতে নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন তাতে করে আপনার চুলকানি দূর হবে।
  •  আপনি যদি নিয়মিত কাঁচা হলুদের সাথে নিমপাতা বেটে ত্বকে লাগাতে পারেন তাহলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে। আপনার ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর হবে তবে হলুদের পরিমাণ নিম পাতার চেয়ে কম হবে। তোকে হলুদ ব্যবহার করার পর অবশ্যই মনে রাখবেন অতিরিক্ত  রোদের তাপ এড়িয়ে চলবেন।
  •  আপনারা যদি নিম পাতার তেল ব্যবহার করতে পারেন তাতে আপনার শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী হবে কারণ নিম পাতার তেলে রয়েছে ভিটামিন ই এবং এটিকে ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা আপনার চুলের জন্য ও ত্বকের জন্য খুব উপকারী।
  •  আমাদের শরীরে যত আজেবাজে জিনিস রয়েছে তা সবকিছু ভালো করে দেয় নিম পাতা। আপনার শরীরের  আপনার শরীরের  গতি বাড়বে বিষাক্ত পদার্থ দূর করবে এবং রক্তে শুদ্ধতা বাড়াবে এই নিম পাতা। আপনি এর ফলাফলে দেখতে পারবেন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য তো দূর হবে এবং আপনার তোকে পরিষ্কার রাখবে। তিন থেকে চারটি নিম পাতা খেতে হবে আরে আরে নিম পাতা খেয়ে এখনই নিজের মুখটাকে তেতো করে নিলেন নাকি
  •  আরে এরও তো একটি সহজ সমাধান রয়েছে আসন আমরা এর একটি সহজ সমাধান সম্পর্কে জানি। আপনি প্রথমে নিম পাতা খেয়ে বেটে নিয়েন তারপর সেই নিম পাতা দিয়ে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করুন আর তার রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিন তারপর একটি কাঁচের বয়ানে সে বইগুলোকে সংরক্ষণ করুন আর প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি বড়ি পানি দিয়ে ঢক করে গিলে খেয়ে নিন তাহলেই তো হয়ে গেল আপনার নিম পাতা খাওয়ার বেস্ট সমাধান। 
  • পানির  সাথে নিম পাতা দিয়ে সিদ্ধ করে নিন তারপর আপনার গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে গোসল করুন যদি আপনার শরীরে কোন চুলকানি বা ইরিটেশন থেকে থাকে তাহলে তাহলে দূর হয়ে যাবে। এছাড়া শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতেও নিম পাতা সেদ্ধ পানি খুব উপকারী।
  •  নিমপাতা দিয়ে সেদ্ধ করা পানি বোতলে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন আপনার ত্বকের জন্য কোন প্যাক তৈরির কাজে এই পানি ব্যবহার করতে পারেন।
  •  আপনার দাঁতের যাবতীয় সমস্যার সমাধান দিতে নিম পাতার জুড়ি মেলা ভার। আমরা সবাই জানি, দাঁতের জন্য নিমপাতা একটি খুব উপকারী জিনিস। নিম পাতা দিয়ে দাঁতন করলে আপনার দাঁত সুস্থ থাকবে দাঁতের গোড়া দাড়া রক্ত পড়বে না আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে নিমপাতা খুব উপকারী।
  •  আপনার শরীরের কোন ক্ষতস্থান বা পোড়া জায়গায় যদি নিম পাতার রস ব্যবহার করেন তাহলে একটা ভেষজ ঔষধের  কাজ করবে।
  •  নিমপাতা কে ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়ো করুন এবং কাচের বয়েমের তা সংরক্ষণ করে রাখুন মধু মিশ্রণ করে পানির সাথেও প্রতিদিন এটি সেবন করতে পারেন আবার আপনার ত্বকের জন্য বা চুলের জন্য প্যাক হিসেবে নিম পাতার গুড়া  ব্যবহার করতে পারেন।

নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি 

 এলার্জি অনেক বহু পুরনো একটি অসুখ প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে একটু না একটুও এলার্জির সমস্যা রয়ে গেছে। এলার্জি সমস্যার কারণে আমাদের প্রিয় খাদ্য তালিকা থেকে না জানি কত খাদ্য খাদ্যকে খাবার তালিকা থেকে বাদ রাখতে হয় হাসির ডিম, চিংড়ি মাছ, গরুর গোস্ত, ইলিশ মাছ, পুটি মাছ, কচু, বেগুন ইত্যাদি জিনিস আমাদের পছন্দ থাকা শর্তেও আমরা এই এলার্জির কারণে খেতে পারি না এটা আমাদের অনেক বড় ধরনের একটি সমস্যা। 

আরো পড়ুনঃ পাতিলেবু খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

আমাদের শরীরে হাঁপানি হয় চর্মরোগ হয় বা হাঁচি কাশি হয় এলার্জির কারণে। এ এলার্জির সমস্যা দূর করার জন্য অবশ্যই আপনারা নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন। তবে আমি বলব ওষুধ সেবন ছাড়াও আপনাদের অ্যালার্জি ভালো করা সম্ভব তা সেটা কি দিয়ে এই নিমপাতা দিয়ে। আপনি চাইলে নিমপাতা একমাস ব্যবহার করে এলার্জিকে চির বিদায় করে দিতে পারেন।

 নিম পাতার মিশ্রণ কিভাবে বানাবেন : পরিমাণ মতো নিম পাতা শুকিয়ে নিন তারপর সেটা পাটায় বেটে গুঁড়ো করে নিন তারপর কাঁচের জারে ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখুন।

 কিভাবে ব্যবহার করবেন: এক গ্লাস পানির মধ্যে এক চা চামচ নিমপাতা ভিজিয়ে রাখুন এক ঘন্টা তারপর ভালো করে নেড়েচেড়ে ভুসি বা মধুর সঙ্গে সকালে খালি পেটে পান করুন। এভাবে দুপুরবেলা ভরা পেটে খেতে পারেন রাত্রে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস খেতে পারেন। এই একই নিয়মে যদি টানা একমাস আপনি নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনার এলার্জি সারা জীবনের জন্য বিদায় নিবে।

 নিম পাতা বেটে শরীরে দিলে কি হয় 

 আপনি যদি নিমপাতা বেটে শরীরে লাগান তাহলে তাহলে আপনার যাবতীয় ব্যাকটেরিয়া ও পাঙ্গাস দূর হয়ে যাবে। আপনার শরীরের চুলকানি দূর হবে বিভিন্ন ধরনের হ্রাস শরীরে দেখা যায় এ ধরনের রেশ আর আসবে না। আপনার শরীরের যে কোন জায়গায় ক্ষত  স্থানের সৃষ্টি হলে সেখানে নিম পাতার বেটে লাগান অনেক উপকার পাবেন। আপনার ত্বকের ব্রণ ভালো করতে নিমপাতা বেটে লাগান তাতে উপকার পাবেন। নিম পাতায় রয়েছে

আরো পড়ুনঃ হাটু ব্যথা সারানোর ঘরোয়া উপায়

 প্রচুর পরিমাণে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা ব্রণ উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে পারে। নিম পাতার মধ্যে রয়েছে হিলিং উপাদান যা আপনার ক্ষত নিরাময়ের জন্য সাহায্য করবে।

 নিম পাতার রস খেলে কি উপকার পাওয়া যায়

 নিম পাতার গুনাগুন এসিডিটিতে খুব উপকার করে। নিম পাতাকে পানির মধ্যে সিদ্ধ করে যদি আপনি সকালে খালি পেটে পান করতে পারেন তাহলে আপনার এসিডিটি ও পেটের ব্যথা দূর হবে। নিম পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এতে আরও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনাদের শরীরের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এছাড়া সর্দি কাশির মতো রোগকে নিরাময় করতেও খুব উপকারী।

 নিম পাতা খেলে কি কিডনির ক্ষতি হয় 

 নিম পাতার অনেক উপকার রয়েছে তার সঙ্গে বেশ কিছু অপকারিতা রয়েছে আর এই অপকারিতা সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের কিডনি। ধরুন যদি আপনার কিডনি বা লিভার সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত নিম পাতা ব্যবহার করবেন না বা খাবার জন্য সেবন করবেন না। এতে আপনার লাভ হবে না ক্ষতি হয়ে যাবে। আপনার ত্বকে নিম পাতা ব্যবহারের সময় যদি অ্যালার্জি দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই তা ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন। 

 নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয় 

 নিম পাতার বড়ি আমাদের ত্বকের জন্য খুব উপকারী এটা ব্যবহারে আমাদের ত্বক পুনর্জীবিত হয়। নিম পাতার বড়ি খেলে আমাদের কাশি দূর হয়, বমি বমি ভাব দূর হয়, হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, শরীরের ক্লান্তি দূর করে, আপনার মূত্রনালির সমস্যা দূর করে, কৃমি সমস্যা দূর করে, আপনার শরীরে ক্ষতস্থানে ব্যথা দূর করতে কাজ করে। প্রতিদিন নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন এতে করে আপনার শরীর সুস্থ সতেজ থাকবে।

নিম-পাতার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-জেনে-নিন

 নিম পাতার ২২ টি রোগের সমাধান

 নিম গাছ আমাদের জন্য এমন একটি বৃক্ষ যার পাতা শিকড় বাকল রস ফল ফুল সবই আমাদের জন্য খুবই উপকারী। শুধু নিম দিয়ে নিরাময় করতে পারবেন এমন বাইকটি রোগের সমাধান নিয়ে আজ আমরা কথা বলব। আপনারা জানেন নিম পাতা থেকে আজকাল অনেক ধরনের প্রসাধনীয় তৈরি করা হচ্ছে। নিম পাতা কৃমিনাশক হিসেবে খুবই কার্যকরী উপাদান।

 নিম গাছের কাঠ থেকে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র। আপনারা জানেন নিম গাছের কাঠ খুবই শক্ত হয়ে থাকে। এ কাঠে ঘুন ধরে না। উইপোকা লাগতে পারে না। ২১ শতকের বৃক্ষ বলে ঘোষণা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

 চুলকানি : আপনার চুলকানি ভালো করার জন্য নিম পাতা পানির মধ্যে দিয়ে সেদ্ধ করে সে পানি দিয়ে গোসল করুন আপনার চুলকানির উপশম ঘটাবে এছাড়া নিমপাতা কে তেলের মধ্যে ভেজে গুঁড়ো করে যদি চুলকানির স্থানে মাসাজ করেন তাহলেও এখানে ভালো হয়ে যাবে।

 ক্রিমিনাশক : আপনারা খেয়াল করে দেখবেন পেটে যখন কৃমি হয় তখন  আবার পেট বড় দেখায় চেহারা অনেকটা ফ্যাকাস হয়ে যায়। পেটে কৃমি দূর করার জন্য নিম পাতার জুরি মেলা ভার। কৃমি দূর করার জন্য নিম গাছের মূলের ছাল গুড়া করে নিন ৫০ মিলিগ্রাম গুড়া দিনে তিনবার সামান্য গরম  খেতে পারেন। আপনি নিয়মিত দশ দিন ব্যবহার করুন তাহলে আপনি এর ভালো উপকার পাবেন। আর অবশ্যই বাচ্চাদের জন্য যখন এটি ব্যবহার করবেন তার পরিমাণের মাত্রা ১ থেকে ২ গ্রাম রাখবেন।

 দাঁতের রোগ: দাঁতের রোগ দূর করতে নিমের ডাল ব্যবহার করতে পারেন। নিমের ডাল দ্বারা মেসওয়াক করলে দাঁত সুস্থ থাকে মজবুত থাকে তাদের রক্ত পড়া দূর হয় দাঁতের দুর্গন্ধ দূর হয়। আপনার দুই থেকে তিন সপ্তাহের বেশি যদি কাশি হয়ে থাকে আর কম বুকে জমে যায় তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন ৩০ ফোঁটা গরম পানির মধ্যে দিয়ে পান করুন তাহলে কাশি থেকেমুক্তি পাবেন।

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্বক: ত্বকে ব্যবহারের জন্য নিমপাতা একটি বহু পরিচিত উপাদান যা দারা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করা যায়। নিম পাতা দ্বারা ফেসওয়াশ তৈরি হয় সাবান তৈরি হয় ক্রিম তৈরি হয় পেস্ট তৈরি হয় শ্যাম্পু তৈরি হয় আমরা নিত্যদিন আমাদের ত্বকের জন্য ব্যবহার করে আসছি। আপনার ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য নিম পাতা বেটে ব্রণের স্থানে লাগাতে পারেন আবার নিম পাতার বড়ি খেয়েও আপনার ব্রণের উপশম ঘটাতে পারেন।

 নিম পাতা হল ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস বিরোধী তাই আপনার ত্বকের জন্য এটি খুবই উপকারী আপনার ত্বকের ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্তি দিবে। নিম পাতার সঙ্গে অবশ্যই কাঁচা হলুদ ব্যবহার করবেন কাঁচা হলুদ ব্যবহার করার জন্য আপনার ত্বক আরো বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। নিম পাতার সঙ্গে হলুদ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে মনে রাখবেন হলুদের পরিমাণ যেন কম থাকে। পাতার সঙ্গে হলুদ ব্যবহার করলে আপনি অতিরিক্ত সূর্যের তাপ এড়িয়ে চলবেন।

নিম-পাতার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-জেনে-নিন

রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ : আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য নিমপাতা খুব কার্যকরী একটি পাতা। নিমপাতা আপনার রক্তের সুগারের পরিমাণ কমাবে। নিমপাতার রস রক্ত সঞ্চালনের সাহায্য করে। আপনি আরো ভালো ফল পাওয়ার জন্য নিমের কচি পাতার রস খালি পেটে। এছাড়া আপনার ডায়াবেটিস কমানোর জন্য সকালে খালি পেটে পাঁচটি গোলমরিচ ও ৮ থেকে ১০ টি কচি নিমপাতা বেটে খেতে পারে না।

 চুল: চুলকে আকর্ষণীয় সুন্দর ও ঝলমলে করতে ঘন ও মজবুত করতে নিম পাতা জুড়ে মেলা ভার। আপনাদের চুলের খুশকি দূর করতে নিম পাতা খুবই কার্যকরী উপাদান। চুলে শ্যাম্পু করার সময় নিম পাতা সিদ্ধ করা পানি ব্যবহার করুন এতে করে আপনার চুল মজবুত হবে। খুশকি দূর যাবে। আপনি প্রতি সপ্তাহে দুইদিন নিমপাতা ভালো করে ব্যবহার করুন। মধু মধু ও নিম পাতা সঙ্গে মিশ্রণ বানিয়ে যদি আপনার মাথায় লাগিয়ে রাখেন

 তাহলে আপনার চুল মজবুদ ও ঝলমলে হবে। মধু ও নিম পাতার মিশ্রণ সপ্তাহে অবশ্যই দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন। এছাড়া আমলকির রস নিম পাতার রস লেবুর রস টক দই পরিমাণ মতো মিশিয়ে নিয়ে এবং সপ্তাহে দুইদিন চুলে লাগিয়ে রাখুন তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন এরপর দেখুন ম্যাজিক আপনার চুলের তো বাড়বে এবং লম্বা হবে।

 উকুন বিনাশে : উকুন বিনাশের জন্য নিম পাতা খুব উপকারী একটি জিনিস নিমপাতা কে পেস্ট তৈরি করে নিন তারপর আপনার মাথার তালুতে মাথার পুরস্কারটা ভালো করে মেসেজ করে নিয়েন ১০ মিনিট পর মাথা শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন তাতে আপনার কোথা থেকে উকুনের বিনাশ ঘটবে।

 খুশকি বিনাশে : নিম পাতা আপনার খুশকি বিনাশের জন্য খুব উপকারী। আপনার খুশকি দূর করতে যে ভাবে নিম পাতা ব্যবহার করবেন। কচি কচি নিম পাতা নিয়ে তা পাটায় পেস্ট করুন তারপর আপনার পুরো মাথা স্কাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এবং চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত নিম পাতার পেস্ট লাগান। এভাবে ১৫ থেকে ১ মাস ব্যবহার করুন তারপর দেখুন নিম পাতার ম্যাজিক। 

 ওজন কমাতে: নিম পাতার রস আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কাটতে সাহায্য করে নিম পাতার রস। যে ভাবে খেলে আপনি ওজন কমাতে পারবেন। পরিমাণ মতো নিমপাতা নিন এবং রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিন শুকানো হয়ে গেলে তা পাটায় বিষে গুঁড়ো করে নিন একটি পরিষ্কার কাচের যারে তা সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির মধ্যে এক চা চামচ নিম পাতার রস গুলে

 রাখুন আধা ঘন্টার জন্য আধা ঘন্টা পরে খেয়ে ফেলুন এভাবে দুপুরে ও খাবার পর খেতে পারেন। এভাবে সকালে খালি পেটেও নিম পাতার রস খেতে পারেন অনেক উপকার পাবেন।

 রক্ত পরিষ্কার করে: নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক  যা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারীর জন্য উপযোগী।  নিম পাতায় অ্যান্টিসেপটিক থাকার কারণে রক্ত পরিষ্কার হয়। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত নিম পাতার রস সেবন করেন তাহলে আপনার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং রক্ত পরিষ্কার করবেন।

 ঠান্ডা জনিত বুকের ব্যথা : ঠান্ডা জনিত কারণে যদি আপনার কাশি হয়ে থাকে এবং বুকে কফ বসে যায় বুক ব্যথা হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে নিম পাতা আপনার জন্য খুব কার্য করি একটি উপাদান হবে। ৭ থেকে ১০ দিন নিয়মিত নিম পাতার রস সেবন করুন এতে করে আপনার ঠান্ডা দূর হবে এবং হাতের ব্যথা ভালো হয়ে যাবে।

 পোকামাকড়ের কামড় : কোন বিষাক্ত পোকামাকড় যদি আপনাকে কামড়ে দেয় সে ক্ষেত্রে নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে সেই ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দেন যাতে করে আপনার ক্ষতস্থান অতীত দ্রুত সেরে যাবে।

 জন্ডিস : নিম পাতায় থাকা ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিসেপটিক এর  কারনে রক্তনালী পরিষ্কার রাখে এবং জ্বর আসলে তা অতি দ্রুত সারিয়ে তোলে। আপনার যদি জন্ডিস হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিম পাতার বাকলের রস অথবা নিম পাতার রস ২৫ থেকে ৩০ ফোটা মধু মিশিয়ে খান  এক মাস নিয়মিত নিম পাতা ব্যবহার করুন তাহলে আপনার জন্ডিস এর মত মরণব্যাধিও অতি দ্রুত ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে।

 ভাইরাস রোগ: নিম পাতায় রয়েছে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার শক্তি যা আমাদের শরীরে কোন ধরনের ভাইরাসকে জামতে দেয় না। আপনার ভাইরাস নির্মূল করবেন নিম পাতার রস। আগে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হতো তাতে নিম পাতার রস ব্যবহার করা হতো যেমন ধরুন পক্স হওয়া হাম হওয়া এগুলোতেও নিম পাতার রস ব্যবহার করা হয়। আপনি নিম পাতা সিদ্ধ করে যদি গোসলের পানির সঙ্গে মিশিয়ে গোসল করেন তাহলে আপনার ত্বকের চুলকানি ও জ্বালাপোড়া দূর হবে।

 ম্যালেরিয়া: ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচতে আপনার করণীয় যেটি সেটা হল নিম পাতা পানি দিয়ে সেদ্ধ করার পর সেই পানি ঠান্ডা করে একটি বোতলে ঢেলে নিন তারপর সেই পানি দিয়ে আপনার বাড়ির আশেপাশে ঘরের মধ্যে স্প্রে করুন। নিম পাতা মশা মাছি দূর করার একটি উত্তম মাধ্যম।

বাত: নিম পাতার রস খেলে বাদ ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন। আমাদের শরীরের যাবতীয় ভাইরাস দূর করার পর আমাদের রক্ত যখন পরিষ্কার হয়ে যায় আমাদের শরীরে যে ব্যথাযুক্ত স্থানগুলো থাকে তার মধ্যে বাত ব্যথা ও একটি। আরে বাত ব্যথা ভালো করার উত্তম উপায় হল নিম পাতা। নিমের বাকোল নিমের পাতার নিমের ফল হাত ব্যথা সারানোর একটি মহা ঔষধ। আপনি যদি আপনার ব্যথাযুক্ত স্থানে নিমের তেল মাসাজ করেন তাহলে আপনার বাত ব্যথা সেরে যাবে।

 চোখ: আপনার চোখে যদি চুলকানির সমস্যা হয় তাহলে নিম পাতা পানি দিয়ে সেদ্ধ করে নিন তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই পানি দিয়ে আপনার চোখে ঝাপটা দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন আরাম পাবেন।

ব্রণ দূর করতে: নিম পাতা বেটে পেস্ট করে আপনার  ব্রণের স্থানে লাগান তাতে করে আপনার মুখের জ্বালাপোড়া দূর হবে এবং চুলকানিও কমে যাবে, ব্রণ সেরে যাবে।

 ছত্রাকে ইনফেকশন দূর করতে: ছত্রাক ইনফেকশন দূর করতে নিম তেল ব্যবহার করুন। আপনার শরীরের যে কোন জায়গায় ফাঙ্গার বা ইনফেকশন থাকলে নিম ব্যবহার করতে পারেন। আপনার শরীরের যেকোন ইনফেকশন বা কত স্থানে নিম পাতা পেস্ট করে ব্যবহার করুন অথবা নিমের তেল ব্যবহার করতে পারেন দিনে তিন থেকে চার বার নিমের তেল বা নিমের পেস্ট ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন। 

 ক্ষত নিরাময়: আপনারা হয়তো ভাববেন নিমপাতা আবার কেমন করে ক্ষত দূর করার উপায় হতে পারে? হ্যাঁ আমি বলব অবশ্যই নিমপাতা কতদূর করার একটি কার্যকরী উপায়। আপনি যদি নিম পাতার পেস্ট করে আপনার ক্ষ ক্ষতস্থানে লাগাতে পারেন তাহলে আপনার কত অতি দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। এতে থাকা অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল উপাদান আপনার ক্ষত নিরাময় করতে দ্রুত কাজ করে 

অর্জিন: আপনি যদি বহুদিন ধরে পেটের প্রায় ভোগেন তাহলে অবশ্যই নিম পাতার দশ ব্যবহার করবেন। এই ধরনের আমাশয় পাতলা পায়খানা বমি বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি সমস্যায় অন্তত ৩০ফোঁটা নিমের রস এক গ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকাল বিকাল খেতে পারেন এতে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

 এলার্জি: আপনার এলার্জির জনিত সমস্যা দূর করার জন্য অবশ্যই নিমপাতার রস ব্যবহার করুন অথবা নিমপাতা কে পানির মধ্যে দিয়ে সেদ্ধ করে নিন দশ মিনিট তারপর আপনার গোসলের পানির সঙ্গে সেই পানি মিশিয়ে নিন এরপর গোসল করুন আপনার শরীরের এলার্জিজনিত সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এছাড়া কাঁচা হলুদ নিম পাতা সঙ্গে পেস্ট করে ব্যবহার করতে পারেন আপনার পুরো শরীরে এতে করে এলার্জি আরও দ্রুত সেরে যাবে।

  একজিমা: আপনার শরীরের যেকোন স্থানে একজিমা অথবা ফোড়া বা রাস ব্রণ ইত্যাদি জাতীয় জিনিস যদি দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই নিম পাতার পেস্ট ব্যবহার করবেন। আপনার ত্বকের যে কোন স্থানে এ ধরনের একজিমা হোক না কেন তা অতি দ্রুত সত্য ভালো হয়ে যাবে।

 উপসংহার : নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা 

 নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে এসে আমরা অনেক ধরনের তথ্য পেলাম করছে আপনাদের বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে পেরেছি যা আপনাদের কাজে আসবে। আপনাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন নিম পাতা আমাদের জন্য একটি ঔষধি ও বৃক্ষ যার পাতা থেকে শুরু করে শেখর অব্দি সবটাই আমাদের জন্য খুব উপকারী। আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সুবিধা অসুবিধা গুলো আমরা

 নিমপাতা থেকে পেতে পারি। আমাদের সবার উচিত আমাদের বাড়ির আঙিনায় অবশ্যই একটি  নিমের গাছ রাখা। আপনারা কি জানেন একটি বাড়ির আঙ্গিনায় অবশ্যই একটি নিম গাছ রাখা উচিত কারণ যদি আপনার বাসার আঙিনায় একটি নিম গাছ থাকে তাহলে আপনার বাসায় অসুখ-বিসুখ কম হবে। আমার লেখা আর্টিকেল থেকে যদি আমি আপনাদের কোন তথ্য পেতে সাহায্য করে থাকি তাহলে অবশ্যই আমার পেজটিকে ফলো করবেন এবং আমার পাশে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url