চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিত আমরা কমবেশি সবাই জানি। আরো কিছু নিয়ম সম্পর্কে আমরা জানব। চিয়া সিডের অনেক উপকারিতা রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। আজ আমরা চিয়া সিডের বিশেষ কিছু নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
চিয়া সিড নিয়ে অনেক মানুষের অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকে সেই সব প্রশ্ন কথা কে সামনে রেখে আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে আশা করছি আজকের আর্টিকেল থেকে পাওয়া তথ্য আপ্অনাদের অনেক কাজে আসবে।
পেজ সূচিপত্রঃ
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা মানব দেহের পাচনতন্ত্র সক্রিয় রাখতে এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে চিয়া সিড থাকা আইরন ক্যালসিয়াম, মিনারেল, ফাইবার , ভিটামিন আমাদের দেহের কার্যক্ষমতাকে এমন ভাবে বাড়িয়ে তুলে যেয়ে আমরা এর উপকারিতা বলে শেষ করতে পারিনা। চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। কারণ পরিমাণমতো খেলে যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তেমনি অতিরিক্ত মাত্রাই
সেবন করলে শারীরিক ক্ষতি হবে তাই চিয়া সিড অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে। নিচে দেওয়া হল চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম নিচে দেওয়া হল।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা।
- দিনে বা রাতেঃ চিয়া সিড দিনে বাড়াতে যেকোনো সময় খেতে পারবেন।
- খাবার পরিমাণঃচিয়া সিড অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করা উচিত নয়। পরিমাণ মতো সেবন করুন। চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক পরিমাণ প্রাপ্তবয়স্ক হলে দুই থেকে তিন চামচ সেবন করুন।
- সালাদঃ চিয়া সিড দ্বারা সালাদ তৈরি করা হয় যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
- ড্রিঙ্কসঃচিয়া সিড ড্রিংস হিসেবে পান করা যায় যা শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে।
- লেবুর রস ব্যবহারঃচিয়া সিড খাওয়ার আগে অবশ্যই লেবুর রস এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে তারপর খাবেন এতে অনেক বেশি উপকার পাবেন।
চিয়া সিড কি?
চিয়া সিড এমন একটি উদ্ভিজ্জ যা দেখতে সাদা দানা কালো দানার মত। এই উদ্ভিজ্জ
প্রতিটা দেশে পাওয়া যায় না এই উদ্ভিজ্জটি সাধারণত কিছু দেশে পাওয়া যায়
মেক্সিকোতে ও আমেরিকাতে বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হয়ে থাকে। এটি অত্যন্ত
মূল্যবান একটি উদ্ভিজ্জ তাই একে ডাকা হয় সুপার ফুড নামে।
চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
চিয়া সিড প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ ভরপুর। চিয়া সিড পুষ্টিগুণ অনেক মানুষের কাছে অজানা আপনারা কি জানেন যে দুধের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, একটি কমলা চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালং শাকের চেয়ে ৮ গুণ বেশি আয়রন এবং সালমোন মাছের চেয়ে তিনগুণ বেশি ওমেগা থ্রি রয়েছে। আমরা যারা মধ্যবিত্ত আছি তাদের পক্ষে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে সালমন মাছ, কমলা , দুধ ইত্যাদি খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না আমরা চাইলেই এই চিয়া সিড দ্বারা নিজেদের শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি, ফাইবারের ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা হলুদের উপকারিতা।
এছাড়াও ফসফরাস, তামা, দস্তা, প্রোটিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত বহু পুষ্টিগুণে ভরা এই চিয়া সিড।
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে চিয়া সিড যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অতিরিক্ত সেবনের অপকারিতা আছে মানব দেহকে সক্রিয় করে এমন কোন খাবারই অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া উচিত নয় প্রত্যেকটি খাবারই পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার আগে অনেক উপকার রয়েছে আমেরিকা বিশেষজ্ঞদের মতে লিলাইনমিক্স ও ফাইবারের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মিশ্রণ থাকায় আমাদের শরীরের জন্য এটি বিশেষ উপকারী উদ্ভিজ্জ চিয়া সিড বিশেষ কিছু উপকার হলোঃ
- ওজন কমানোঃ চিয়া সিড ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- মলাশয় পরিষ্কারঃ চিয়া সিড প্রতিদিন দুইবার করে খেলে মলাশয় পরিষ্কার হয় একই নিয়মে ১৫ থেকে ৩০ জন খেলে স্থায়ী সমাধান পাবেন।
- ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণঃচিয়া সিড দুধের চেয়ে ৫গণ ক্যালসিয়াম রয়েছে তাই এটি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ চিয়া সিড ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
- আইরনঃ চিয়া সিড পালং শাকের চেয়ে ৮ গুণ বেশি আয়রন সমৃদ্ধ।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃচিয়া সিড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
- ভিটামিনঃচিয়া সিড ভিটামিন বি , সি , ডি ও ই থাকে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃচিয়া সিড নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- ক্লান্তি দূরঃ আমাদের সারা দিনে কর্মব্যস্ততায় শরীর ক্লান্ত থাকে আর এই ক্লান্তি দূর হয় চিয়া সিড সেবনে ক্রুন।
- ভালো ঘুমঃ রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস চিয়া সিড সেবন করুন ভালো ঘুম হবে।
- পানির ঘাটতিঃ চিয়া সিড পানির ঘাটতি পূরণ করে।
- ক্ষুধা নিবারণঃ খাবার হজমে সহায়তা করে, যার কারণে খাবার রুচি বাড়ে ক্ষুধা নিবারণ করে।
- গ্যাস্ট্রিক ও আলসারঃ হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হওয়ায় গ্যাস্ট্রিকো আলসার হয় না।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
- এলার্জিঃ কিছু মানুষের মধ্যে দেখা যায় চিয়া সিড সেবনে এলার্জি দেখা যায় এ ধরনের সমস্যা হয় তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- হজমের সমস্যাঃ অতিরিক্ত চিয়া সিড সেবনে হজমের সমস্যা দেখা দিবে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
চিয়া সিড বাচ্চাদের খাওয়ার নিয়ম
চিয়া সিড বাচ্চাদের খাওয়ানো যায় প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে যেমন দুই থেকে তিন চামচ সকালে বিকালে খাওয়া যায়। তেমনি বাচ্চারাও দিনে একবার সেবন করতে পারে বাচ্চাদের সেবনের নিয়ম হলো এক গ্লাস পানির সাথে এক চামচ দিয়ে বাচ্চাদের খাওয়াতে পারেন তবে এক চামচের বেশি বাচ্চাদের সেবন করাবেন না চিয়া সিড বাচ্চাদের অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ালে হজমের সমস্যা হতে পারে, বমি বমি ভাব ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। চিয়া সিড বাচ্চাদের খাওয়ানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াবেন।
চিয়া সিডে বাচ্চাদের উপকারিতা
বাচ্চাদের অনেক উপকার হয় যেমন বাচ্চাদের চিয়া সিড খাওয়ানোতে স্মৃতিশক্তি প্রখর হয় হার মজবুত হয় খাবারের রুচি হয় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করেও। শরীরে ক্যালসিয়াম, আয়রন , ফাইবার , প্রোটিন , ফসফরাস , তামা , দস্তা এরকম আরো অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে তাই বাচ্চাদের অত্যন্ত উপকারী।
সুপার ফুড চিয়া সিড কেন খাবেন
- সুপারফুডচিয়া সিড খেলে ক্যান্সার রদ করে।
- চিয়া সিড কোনো সুগার না থাকায় ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে তাই ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- মানবদেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- চিয়া সিড আমাদের মলাশয় এবং ক্যান্সারের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
- মানসিক প্রশান্তিতে খুব কাজ করে এবং ভালো ঘুমের জন্য উপকারী।
- মানব শরীর থেকে টক্সিন জাতীয় বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।
- মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করেন।
শেষ কথা
চিয়া সিড আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী তাই এটা অতিরিক্ত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকব। কারন মাত্রার বেশি সেবন করলে রক্ত পাতলা হতে পারে । গ্যাসটিক জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে আবার কারো আলাজি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই চিয়া সিড বাবহারের আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং এর সঠিক তথ্য জানুন। আশা করছি এই আর্টিকেল থেকে আমি আপনাকে সঠিক কিছু তথ্য প্রদান করতে পেরেছি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url